কোন শস্যদানার খোঁজে মরিয়া বিল গেটস, কি আছে তাতে?

Reporter Name
  • বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

ফনিও নামের এক প্রাচীন শস্যদানার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন মার্কিন ধনকুবের ও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি ধরে এই শস্যদানা খাবার হিসেবে গ্রহণ করে আসছে আফ্রিকার কিছু অঞ্চলের মানুষ।

ফনিওর জলবায়ু পরিবর্তন এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা আছে বলেই মনে করেন বিল গেটস। নিজের ব্লগসাইট ‘গেটস নোটস’-এ বিষয় বিস্তারিত আলাপ করেছেন তিনি।

বিল গেটস লিখেছেন, আমেরিকায় জন্ম হওয়ায় তিনি গম ও ভূট্টা জাতীয় শস্যকেই প্রধান খাবার হিসেবে পেয়েছেন। পূর্ব এশিয়ায় জন্মালে তাকে অনেক বেশি ভাতই খেতে হতো। আর পশ্চিম আফ্রিকায় বড় হলে পাওয়া যেতো ফনিও নামের এই প্রাচীন শস্যদানার দেখা। এটি খেয়েই বড় হতে হতো। এই ফনিও পাঁচ হাজারের বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম আফ্রিকায় বিভিন্ন পরিবার খাবার হিসেবে খাচ্ছেন। আফ্রিকা মহাদেশে আর কোনো শস্য এতো দিন ধরে চাষ হচ্ছে না। মানব সভ্যতায় টয়লেট, চাকা আর বর্ণমালা আবিষ্কারের চেয়েও পুরোনো এই শস্যদানার ব্যবহার।
গেটস লিখেছেন, ভালো বৃষ্টি হলে মাটি অল্প খুঁড়ে ফনিওর বীজ ছড়িয়ে দিতে হয়। এর মাত্র দুই মাস পরই ফনিও শস্য কাটার উপযোগী হয়। যদিও পশ্চিম আফ্রিকার কৃষকেরা এই শস্যকে অলস কৃষকের ফসল বলে অভিহিত করে।

ফনিও আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলেই বেশি হয়। আধা-শুষ্ক অঞ্চলে বেশ ভালো জন্মায় ফনিও বেশ খরা-সহনশীল। এর জন্মাতে খুব উর্বর মাটিও দরকার পড়ে না। আর এই ফনিওর মাটির গুণকে পুনরুজ্জীবিত করার গুণও আছে।

গেটস আরো লিখেছেন, ফনিও শস্যদানাকে ক্ষুধার্তের ভাত বলে ডাকা হতো। এ ফসল দ্রুত রোপণ করা যায়। যখন অন্যান্য খাবার পাওয়া যায় না, তখন আপনি এটি খেতে পারেন। আজ অনেকে এ শস্যদানাকে সুপারফুড বলে অভিহিত করছে। বিশ্বের কিছু অংশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে। একটি উচ্চমানের পুষ্টির উৎস শিশুদের বিকাশকে আরও কার্যকর করতে পারে। এই শস্যে সুস্বাদু পোরিজও বা জাউ ভাতের মতো খাবার তৈরি করা যায়। এসব খাবারে অনেক কিছু থাকার পরেও সর্বত্র কেন খাওয়া হয় না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফনিওর মতো ফসল বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা বেশ কঠিন। যে অংশ খাওয়া হয় তার বাইরের আবরণ শক্ত থাকে। ঐতিহ্যগতভাবে দক্ষ নারীরা পা ব্যবহার করে বাইরের আবরণ অপসারণের কাজ করে। ফনিও প্রক্রিয়ায় বেশ সময় ও শ্রম-লাগে। সেনেগালে চাষ করা ফনিওর মাত্র ১০ শতাংশ বাজারে বিক্রি হয়। বাকি অংশ প্রায় পুরোটাই কৃষক ও তাদের পরিবার সরাসরি ব্যবহার করে। ঐতিহ্যগতভাবে ফনিও ফসল কাটাও একটা কঠিন কাজ। শস্য সংগ্রহ, পরিষ্কার, ধোয়া, শুকানো ও রান্না করতে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ALL RIGHTS RESERVED -2020-2024
Design & Developed by positiveit.us