গরমে হাসপাতালে বেড়েছে শিশু রোগীর চাপ

Reporter Name
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

তীব্র গরমে প্রতিদিনই মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এদিকে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। একসাথে একই বেডে দুই থেকে তিনজন এবং পাশাপাশি ফ্লোরেও রোগীরা থাকছে। এতে করে রোগীদের পড়তে হচ্ছে বেশি সমস্যায়। গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে থাকতে দেয়ায় রোগীসহ তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেয়া দিয়েছে।

সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, মাদারীপুরে তীব্র তাপদাহে স্বাভাবিক জনজীবনে ভোগান্তি নেমেছে। গত প্রায় দশ দিন ধরে তাপমাত্র ৩৮ থেকে ৪০ সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। ফলে এতে করে জনজীবনে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগী। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১০৮ জন শিশুকে ভর্তি দেখা যায়। এছাড়াও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২৫ জন শিশুকে ভর্তি দেখা গেছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৪০ শয্যা থাকায় একসাথে এত শিশুকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের। শয্যা সংকট থাকায় এক শয্যায় এক সাথে দুই থেকে তিনজন শিশুকে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও হাসপাতালের ফ্লোরেও রোগীরা মাদুর বিছিয়ে থাকছেন। গরমের মধ্যে এভাবে গাদাগাদি করে থাকতেও রোগীসহ অভিভাবকদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

এছাড়াও হাসপাতালে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৪৯ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ জনই শিশু। অতিরিক্ত গরমের জন্যই হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
হাসপাতালে রোগীর সাথে থাকা ফুপু অদিতি বলেন, আমার ভাইয়ের ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। অনেক গরমের কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু এক বেডে দুইজন থাকছে। এতে করে এই গরমের মধ্যে থাকতে সমস্যা হচ্ছে। বাচ্চার মায়েদের সারারাত বসে ও দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কি যে একটা অবস্থা, তা বোঝাও যাবেনা।
রোগীর মা ফারজানা আক্তার বলেন, আমার বাড়ি মাদারীপুরের রঘুরামপুরে। আমার দুই ছেলেই অসুস্থ। বড় ছেলের টাইফয়েড ও ছোট ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। গত ছয়দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু কোন বেড পাইনি। তাই ফ্লোরেই থাকতে হচ্ছে।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিতু বাড়ৈ বলেন, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১০৮ জন রোগী ভর্তি আছে। গরমের কারণে কয়েকদিন ধরে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কয়েকদিন ধরে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে আবার চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। একসাথে এত রোগী থাকায় মাত্র ৪০ শয্যায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও আমরা আমাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মুনির চৌধুরী বলেন, সারা দেশের মতো মাদারীপুরেও তাপদাহ বেশি হচ্ছে। এরফলে রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে একটু বেশি। তবে গরমের কারণে এখানে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি অসুস্থ হচ্ছে। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। তবে বেশি ঠান্ডা পানি পান করার প্রয়োজন নেই। যদি রোদের মধ্যে কাজ করতে হয়, তাহলে কিছুক্ষণ পর পর ছায়ায় বিশ্রাম নিবেন। একটানা রোদের মধ্যে কাজ করা যাবেনা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ALL RIGHTS RESERVED -2020-2024
Design & Developed by positiveit.us